• বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৮ পূর্বাহ্ন |
  • English Version
ব্রেকিং নিউজ :

শাকিরুজ্জামান রাখালকেই দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেখতে চায় তৃুণমূল নেতা-কর্মীরা

এম.এফ.এ মাকামঃ

দলের যেকোন প্রয়োজনে ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা শাকিরুজ্জামান রাখালকেই দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেখতে চায় দলটির তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করেই তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু। আওয়ামী লীগের জন্য বহুবার রাজপথে বিএনপি-জামাতের হাতে নির্যাতনের শিকার হন রাখাল।

সাবেক ছাত্রনেতা রাখাল যৌথবাহিনীর হাতেও একাধিকবার আটক এবং নির্যাতনের শিকার হন। মামলা-হামলা-নির্যাতনের শিকার এবং মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা জনপ্রিয় নেতা শাকিরুজ্জামান রাখাল আসন্ন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা শাকিরুজ্জামান রাখাল দেওয়ানগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮২ সালের ১ অক্টোবর বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের পোল্যাকান্দি গ্রামে জন্ম নেওয়া রাখালের বাবা আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম সুরুজ্জামান দুদু বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর মায়ের নাম সজিরন নেছা। মরহুম সুরুজ্জামান দুদু আওয়ামী লীগের নিবেদিত নেতা ছিলেন। রাখালের বড় ভাই সোলায়মান হোসেন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। সোলায়মান হোসেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।

তিনি বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক। তাঁর বড় মামা মরহুম আবু ছাইদ বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। রাজনৈতিকভাবেই তাঁর শৈশব কৈশর শুরু হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করেই তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু। তাঁর প্রাণের দল আওয়ামী লীগের জন্য বহুবার রাজপথে বিএনপি-জামাতের হাতে নির্যাতনে শিকার হন।

যৌথবাহিনী তাকে একাধিকবার অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে প্রাণনাশের চেষ্টা করেছে জনপ্রিয় এই নেতার জীবন বৃত্তান্ততে উল্লেখ করা হয়েছে। রাখাল বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় মেয়াদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০০৫ সালে বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ লাভ করেন।

২০১৪ সালের কাউন্সিলদের প্রত্যক্ষ ভোটে বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে জয়লাভ করেন। চলতি বছরের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১১ সালে বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসাবে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। চলতি বছর দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সময় ১৯৯০ সাল থেকেই সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন রাখাল। পরবর্তীতে শেখ রাসেল স্মৃতি সংঘের (পোল্যাকান্দি) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৪ সালে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য পদ লাভ করেন। পরবর্তীতে আহসান হাবীব টিটু মুক্তাদির বিল্লাহ সিপনের প্রস্তাবিত প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন। পরবর্তীতে দলের স্বার্থে নিজের নাম প্রত্যাহার করেন। ২০০২ সালে অপারেশন ক্লিনহার্টের সময় যৌথ বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। সে সময় যৌথ বাহিনীর হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হন এবং জামালপুর জেলা কারাগারে ৭২ দিন কারাভোগ করেন। শুধু আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অপরাধে তাকে বহুবার হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ১৯৯৯ সালে রাজ্জাক হত্যা মামলায় রাখালকে ২নং আসামী, তার সহোদর ছোট ভাই নাজমুল হোসেনকে ৪নং আসামী এবং বড় ভাই বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান হোসেনকে ১৪ নং আসামী করা হয়েছিল।

পরিবারের ৩ ছেলে মামলার আসামী হওয়ায় সবাই ঘর বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পলায়ন করেন এবং ওই সময় তাদের পরিবারে অন্ধকার নেমে আসে। তখন বৃদ্ধ বাবা-মা’কে দেখার কেউ ছিল না। বহু কষ্টে তাদের সংসার চলতো। তাদের বাবার পৈত্রিক জমিজমা বিক্রি করে এসব মামলা চালাতে গিয়ে নি:স্ব হয়েছিল পরিবারটি। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে রাখালের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়। ১০ মাস ১০ দিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জেল খাটেন। ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমানিত হলে বেকসুর খালাস পান রাখাল।

তারপর থেকেই রাজনৈতিক কারণে অনেকবার কারাবরণ করেন তিনি। রাজনৈতিক কারণে তাকে বহুবার হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন বহুবার। রাখালের রাজনৈতিক জীবনের বহু বছর জেল খেটেছেন, নির্যাতন, অত্যাচার সহ্য করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের একজন পরীক্ষিত দু:দিনের একনিষ্ঠ কর্মী। যা দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা তথা জামালপুর জেলার সকল নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ সবাই অবগত আছেন। সমাজ সেবায়ও তাঁর অবদান কম নয়। রাজনীতিবীদ এবং জনপ্রতিনিধি হবার সুবাদে সমাজসেবক হিসাবে সমাজের বহু কল্যাণজনক কাজ করার সৌভাগ্য লাভ করেন ত্যাগী এই নেতা।

তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং ব্যক্তিগত অর্থায়নে পোল্যাকান্দি জামে মসজিদ, পোল্যাকান্দি ঈদ-গাঁ মাঠ, হাফেজিয়া মাদ্রাসা, বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রদান করেন। এছাড়াও প্রতিবছর বিভিন্ন ধর্ম সভায় ব্যক্তিগত অনুদান দিয়ে ধর্মীয় জলসার আয়োজন করেন তিনি। প্রতি বছর দূর্গা পুজায় উপজেলার ২৫টি পুজা মন্ডপে লাখ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেন। এছাড়াও প্রতিদিন অসহায় দুঃস্থ মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছেন।

এলাকার সাধারণ মানুষ এবং সামাজিকভাবে যে কোনো সমস্যাগ্রস্ত মানুষের পাশে তিনি সবার আগে দাঁড়ান। চেষ্টা করেন তাঁর সাধ্যমত সার্বিক সহযোগিতা করার। আসন্ন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা শাকিরুজ্জামান রাখালই সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন বলে মনে করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।