সরিষাবাড়ি সংবাদদাতাঃ
– চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে নিহত মাসুদ রানার (৩৭) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সকালে সরিষাবাড়ী উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের বয়সিং গোপীনাথপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। দাফনের পর বিকেলে জামালপুর জেলা প্রশাসক মাসুদের পরিবারকে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসার মাধ্যমে নগদ ১ লক্ষ টাকা সহায়তা প্রদান করেন । এ সময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর, পৌর কাউন্সিলর সাখাওয়াতুল আলম মুকুল, ভাটারা ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন বাদল উপস্থিত ছিলেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়,উপজেলার বয়সিং গোপীনাথপুর গ্রামের খলিলুর রহমান ও জমেলা বেগমের তিন ছেলের মধ্যে প্রথম সন্তান ছিলেন মাসুদ মিয়া। দীর্ঘ ৫ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে এসে ২০১৫ সালের নতুন কর্মসংস্থানের জন্য ছুটে গিয়ে সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোর একটি কোম্পানিতে গাড়িচালকের চাকরি নেন । স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তিনি সীতাকুণ্ডে বাসা ভাড়া নিয়ে একসপ্তাহ দিনে এবং পরের সপ্তাহ রাতে ডিউটি করতেন। গত ৪ জুন শনিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি এলাকায় কাশেম জুট মিল সংলগ্ন বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মাসুদ রানা গুরুতর দগ্ধ হন। উদ্ধার করে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করলে আইসিইউতে ৮ জুন বুধবার দিনগত রাত ৩ঃ৪০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার ২ বছর বয়সী একটা ছেলে এবং ৭ বছর বয়সী একটা কন্যা সন্তান রয়েছে। মাসুদ পরিবারের বড় ও একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ার তার মৃত্যুতে পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে গেলো বলে বলছেন অনেকেই।
দুই অবুঝ শিশুর লালনপালনসহ সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটাবেন,সে চিন্তায় দুইচোখে অন্ধকার দেখছেন মাসুমের স্ত্রী।
নিহতের মা জমিলা বেগম বিলাপ করে বলেন, ‘আমার বাবারে কেউ আইনা দেও, আমি দেখমু। বাবা তো আর আমারে মা মা কইরা ডাকবো না, বাবা তো আর টেহা পাঠাবো না।
নিহতের চাচা মোজাম্মেল হোসেন জানান, বিস্ফোরণের রাতেই নাকি মাসুদের নাইট ডিউটির সাপ্তাহিক শেষদিন ছিলো। কে জানতো ওই রাতটাই তার জীবনের শেষ ডিউটি। মাসুদ রানার আত্মার শান্তি কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা জানান,বর্তমান জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে নিহত মাসুদ রানার দাফন গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মাসুদের পরিবারকে জেলা প্রশাসক স্যারের দেওয়া এক লক্ষ টাকা দিয়ে এসেছি। ২ সন্তান ও স্ত্রী যেহেতু রয়েছে সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রশাসন সব সময় তাদের খোজ খবর নিবে এবং মাসুদের পরিবারকে সহায়তা দিবে।