• রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন |
  • English Version
ব্রেকিং নিউজ :
তীব্র তাপদাহে বিশুদ্ধ পানি ও শরবত বিতরন আশেক মাহমুদ কলেজের ছাত্রছাত্রীদের ইসলামপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদন্দ্বীতায় এড.আঃ সালাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত বকশীগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে ২৪ কেজি গাঁজাসহ আটক-৩ জামালপুরে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা জামালপুরে তীব্র দাবদাহে দোস্ত এইড বাংলাদেশ সোসাইটির খাবার পানি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ জামালপুরে ১৫ টি ইউনিয়নে সার্বজনীন পেনশন স্কিমের বুথের উদ্বোধন দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুর পৌর মেয়র কাদের সেখ বরখাস্ত বিএসইসি চেয়ারম্যানকে সিটি ব্রোকারেজ লিমিটেডের ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন দেওয়ানগঞ্জে সিডস কর্মসূচির অবহিতকরণ সভা জামালপুরে এইডস রোগী ২৮ জন কর্মশালায় প্রকাশ

সরিষাবাড়িতে মেয়র -কাউন্সিলর হামলার ফেসবুক লাইভে মেয়র রুকন – মানসিক ভাবে অসুস্থ  মেয়র বললেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী

 

জেএম নিউজ ২৪ ডট কম :

বিভিন্ন সময় ফেসবুক লাইভ ও পোস্টের মাধ্যমে আলোচনায় থাকেন জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি পৌরসভার মেয়র রুকনুজ্জামান। তবে এবার নিজের দেহরক্ষীকে মারধর করার অভিযোগ এনে বিতর্কের মুখে। এদিকে তথ্যপ্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান তার এমন আচরণকে মানসিক অসুস্থ বলছেন।

করোনায় ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কার হয়েছেন রুকনুজ্জামান। অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন কাউন্সিলরা। এই পরিস্থিতি তার রোববার ফেসবুক লাইভ ও নিরাপত্তারক্ষীর গুরুতর আহত দাবি করাকে মানসিক হতাশার কারণ বলে মন্তব্য করেছেন নিজ দলের নেতারা।

রোববার (১০ মে) দুপুর ১২টা ৩৭ মিনিটে ফেসবুক লাইভে আসেন পৌরমেয়র রুকনুজ্জামান। দেহরক্ষী তনয়কে পাশে বসিয়ে তিনি দাবি করে, পৌরসভা কার্যালয়ে প্রবেশের সময় তাকে বাধা দেয়া হয়। তার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রুকনুজ্জামান। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও মালামাল লুটের অভিযোগও তোলেন ফেসবুকে।

এবারও কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হামলার পেছনে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও তথ্যপ্রতিমন্ত্রীকে দায়ী করেন মেয়র ও বহিস্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা রুকনুজ্জামান। এর আগে, গত ১ মে দল থেকে বহিস্কারের পর সংবাদ সম্মেলন করেও কেঁদেছিলেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার (১০ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেয়র রুকুনুজ্জামান তার লোকজন নিয়ে পৌরসভায় ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী ও সব কাউন্সিলের সমর্থকেরা মেয়রকে বাধা দেন। এতেই উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে প্রথমে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কিল-ঘুষির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এরপর রোববার (১০ মে) বিকেল ৪টা ৭ মিনিটে কয়েকটি ছবিসহ আরেকটি পোস্ট দেন রুকনুজ্জামান। ওই পোস্টে তিনি দাবি করেন,দেহরক্ষী তনয়ের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করা হচ্ছে। ফেসবুকে এ পোস্টের পরও শহরজুড়ে আলোচনা শুরু হয়।

তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দাবি, দুপুর ১২টায় ফেসবুক লাইভে সংবাদ সম্মেলনে সময়ে রুকনুজ্জামানের পাশেই বসা ছিলো তার দেহরক্ষী তনয়। তখন তাকে গুরুতর আহত দেখা যায়নি। কিন্তু চারঘণ্টার মাথায় রক্তবমির ছবি দিয়ে পোস্ট দেয়া রহস্যজনক। এনিয়ে শহরজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)আবু মোহাম্মদ ফজলুল করীম মুঠোফোনে বলেন, পৌরসভা কার্যালয়ে ঢোকা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। কাউন্সিলরদের সঙ্গে আগে থেকে মেয়র রুকনুজ্জামানের বিরোধ চলে আসছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

এ ঘটনায় আহত ও রক্তাক্ত হওয়ার বিষয়ে পুলিশ কিছু জানেনা উল্লেখ করে ওসি আরও জানান, ধস্তাধস্তি বা বাকবিতণ্ডার ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

এদিকে, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা.মুরাদ হাসান ফেসবুক পোস্টের অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘মানসিকভাবে অসুস্থ বলেই ফেসবুক লাইভ ও পোস্টে কথা বলছে মেয়র রুকনুজ্জামান। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থেকে তাকে দল থেকে বহিস্কার করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। কাউন্সিলরদের অনাস্থায় মেয়রপদও হারাতে হচ্ছে- সেকারণে নাটক শুরু করেছে।’

পৌরমেয়রের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন ডা. মুরাদ হাসান। তিনি দাবি করেন, সরিষাবাড়ির পৌরসভার মেযর রুকনুজ্জামান  এক সময় ছাত্রদলের নেতা ছিল। তার ভাই যুবদলের ক্যাডার। এখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার আচরণ বুঝেছেন সে দলে অনুপ্রবেশকারী।

তিনি আরও বলেন, ‘গত ৬ মাস ধরে পরিকল্পিতভাবে বিএনপি-জামায়াতের সাথে মিলে ষড়যন্ত্র করছে। করোনার এই দুর্যোগের মধ্যে তার যে কর্মকাণ্ড সেটা কোন সুস্থ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। কাউন্সিলররা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে সরকার সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে। রোববার ১০ মে সরিষাবাড়ী পৌরসভায় তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে ঢুকে ছিল। পৌরসভার কাউন্সিলররা তাকে প্রতিহত করেছে।’

জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা, মারমুখী আচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পৌর মেয়র মোহাম্মদ রুকুনুজ্জামানের বিরুদ্ধে। এনিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে গত ১মে জরুরি বৈঠকে বসে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। বৈঠকে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। এমনকি তার বিরুদ্ধে পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৩ মাসের বেতন-ভাতা না দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ পরিস্থিতিতে মেয়র রুকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানান ১২ জন কাউন্সিলর। এরপর থেকে তিনি পৌরসভায় যাচ্ছিলেন না।

এদিকে, ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে আলোচনা থাকা নতুন নয়। এর আগেও বেশকয়েকবার আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন রুকনুজ্জামান। ২০১৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর, নিজের জীবননাশের শঙ্কা জানিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি। পরদিনই রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হওয়ার দাবি করে পরিবার। এর ৫২ ঘণ্টা পর, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালীঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

সূত্র :সময় সংবাদ


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।